Booster Body Cream-৭ দিনে কালো শরীর ফর্সা

0 minutes, 9 seconds Read

বাংলাদেশে রং ফর্সাকারী ক্রিম কি আসলেই ত্বক ফর্সা করে?

এসব পণ্যে নানা ধরনের রাসায়নিক মিশ্রিত থাকার কারণে বিশ্বজুড়েই প্রসাধনী ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ এসব রাসায়নিক অনেকের ত্বকের জন্য কোন সুরক্ষা বা সৌন্দর্য বৃদ্ধি তো করতে পারেই না, বরং সেটি ক্ষতিকরও হয়ে ওঠতে পারে।

বিশেষ করে রং ফর্সাকারী ক্রিমগুলো নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠছে।

কী ভাবে কাজ করে

ডে ক্রিমের অন্যতম কাজ হল রোদ-বৃষ্টি ও আবহাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে রক্ষা করা। আর নাইট ক্রিমের কাজ ক্ষয়ক্ষতি মেরামতি ও ত্বকের সৌন্দর্য পুনরুদ্ধার। নাইট ক্রিম সারা রাত ধরে ত্বকের গভীরে ময়শ্চার পৌঁছে দেয়, কোলাজেনের মাত্রা বৃদ্ধি করে চামড়া টানটান রাখে। ত্বকের ভিতরের অংশে পুষ্টি পাঠিয়ে নতুন কোষ জন্মাতে সাহায্য করে। কয়েকটি বিশেষ উপাদান খুব সক্রিয় ভাবে কাজগুলি করে। যেমন কফি দানার নির্যাস, মধু, শিয়া বাটার, কিছু এসেনশিয়াল অয়েল, কয়েক ধরনের ভেষজ, জুঁই ও হোহোবার রস, ভিটামিন সি এবং ই ইত্যাদি। ভাল নাইট ক্রিমে এই উপাদানগুলি থাকেই। তবে অ্যান্টি-এজিং নাইট ক্রিমগুলিতে বাড়তি কয়েকটি উপাদান যেমন রেটিনল, আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড, ভিটামিন এ, বি-থ্রি এবং কিছু অ্যান্টি অক্সিডেন্টস থাকে। এগুলি কোলাজেন গঠনের প্রক্রিয়ায় অনুঘটকের কাজ করে ও বয়সজনিত কালো ছোপ মুছে দেয়।

✬আরও পড়ুন:৭ দিনে লম্বা হওয়ার উপায়

প্রকারভেদঃ

বয়স ও ত্বকের ধরন বুঝে নাইট ক্রিম নির্বাচন করতে হবে। কুড়ির কোঠায় বয়স হলে ডিপ নিউট্রিয়েন্টস-যুক্ত নাইট ক্রিম বেছে নিন। সঙ্গে নাইট ক্রিমের পাশাপাশি আন্ডার আই ক্রিম ব্যবহার করা শুরু করুন। কারণ, চোখের নীচের চামড়া খুব পাতলা হয়। সবার আগে বয়সের সূক্ষ্ম রেখা ওখানেই দেখা দেয়। ত্রিশ ছুঁইছুঁই বয়সে অ্যান্টি-এজিং প্রডাক্টগুলি ব্যবহার শুরু করে দিন। এতে বয়স বাড়লে সুফল বেশি পাবেন। চল্লিশ থেকে ত্বকের কোলাজেন দ্রুত হারে ভাঙতে থাকে। ত্বক পুনরুজ্জীবিত করে এমন নাইট ক্রিম বেছে নেওয়া উচিত।

ত্বক শুষ্ক হলে বুনো গোলাপের নির্যাস যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করবেন। এই ক্রিম ত্বকের শুষ্ক খোলস সরিয়ে, ভিতরের নতুন ত্বকের পরত বার করে আনে। ফলে মুখে হালকা গোলাপি আভাও দেখা যায়। তৈলাক্ত ত্বক হলে ডিপ ময়শ্চারাইজ় করে, এমন প্রডাক্ট বাছবেন না। ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখে এমন ক্রিম কিনুন। খুব তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে ক্রিমের সঙ্গে সেরাম মিশিয়ে লাগান। অতিরিক্ত সংবেদনশীল ত্বকের ক্ষেত্রে গ্লিসারিন যুক্ত, ইনটেন্স (ডিপ নয়) ময়শ্চারাইজ়ার দেওয়া ক্রিম বাছাই করুন।

শুধু বয়সই কারণ নয়। অনিয়মিত জীবনচর্যা, স্ট্রেস, অনিদ্রা ইত্যাদির কারণে সময়ের আগেই চেহারা রুক্ষ বিবর্ণ দেখাতে পারে। চোখের নীচের ফোলা ভাব, কুঞ্চন, বলিরেখা দেখা দিতে পারে। আয়নায় নিয়মিত নিজের মুখ পরীক্ষা করুন। এমন লক্ষণ দেখা দিলে যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। নাইট ক্রিমের ব্যবহারে রাতে ত্বকের যত্ন নেওয়ারই একটি অঙ্গবিশেষ।

✬আরও পড়ুন:Himalaya Himcolin Gel ( লিঙ্গ মোটা ও বড় করার ঔষধ )

 

বাছাইয়ের আগে

আপনার ত্বক শুষ্ক না মিশ্রিত, তৈলাক্ত নাকি সংবেদনশীল সে বিষয়টি জেনে ক্রিম বাছাই করুন। আবার কারও হয়তো ডার্ক সার্কল রয়েছে, সে ক্ষেত্রে স্কিন টোন সমান করে এমন ক্রিম বাছলে উপকার পাবেন। যাঁর ত্বকে অল্পেই র‌্যাশ বার হয় তিনি অ্যালকোহলযুক্ত প্রডাক্ট বর্জন করবেন। হাতের উলটো পিঠে অল্প ক্রিম লাগিয়ে মিশিয়ে নিন। কিছুক্ষণ পরে ত্বক সেই ক্রিম শোষণ করে নিলে বুঝবেন তা আপনার ত্বকের জন্য উপযুক্ত।

নাইট ক্রিম ব্যবহার বিধি

প্রথমে ফেসওয়াশ (শীতে ক্লেনজ়ার) দিয়ে মুখ ধুয়ে পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে হালকা মুছে নিন। স্কিন টোনার লাগান। যাঁরা ঘন ঘন মেকআপ করেন, তাঁরা ‘বুস্টার’ সেরাম লাগান। এ বার আন্ডার আই ক্রিমের পালা। ত্বকের কোথাও এজ স্পট (মেচেতা বা ছোপ) থাকলে সেখানেও আই ক্রিম লাগিয়ে ত্বকে মিশিয়ে দিতে পারেন। চোখের পাতায় ক্রিম লাগাবেন না। বিশেষত আই ক্রিম যেন কোনও ভাবেই চোখের ভিতরে চলে না যায়। এর পরে নাইট ক্রিম লাগান। আঙুলের ডগায় আলতো করে নিয়ে, গলার নীচ থেকে উপরের টানে ও গালের অংশে বৃত্তাকার টানে ক্রিম লাগাবেন।

✬আরও পড়ুন:Pen Camera-(ক্যামেরা এখন কলমে

বিশ্বের অনেক দেশের মতো ত্বকের সুরক্ষা এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নানা রকমের প্রসাধনী ব্যবহার করা হয়ে থাকে বাংলাদেশেও।

”আমরা কখনোই গায়ের রংকে সাদা করতে পারি না, উজ্জ্বল করতে পারি। আমাদের ত্বকের স্বাভাবিক যে মেলানোসাইড সেলগুলো আছে, যা রঞ্জক তৈরি করে, সেটাই আমাদের গায়ের রংটা ধারণ করে। এটা ত্বক রক্ষায় অনেকভাবে কাজ করে। ”

 

”এখন বাজারে অনেক সস্তা ক্রিম এসেছে, যেগুলোয় অনেক ভারী রাসায়নিক এবং ক্ষতিকারক পদার্থ রয়েছে। এগুলো খুব তাড়াতাড়ি হয়তো ফর্সা বা সাদা ইফেক্ট দিয়ে দেয়, কিন্তু কিছুদিন পরেই সেটা বরং ত্বকের জন্য নানা ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠে। যেমন ত্বকটা হয়তো খুব লাল হয়ে ওঠে, জ্বলছে বা রোদে যেতে পারছে না। বাংলাদেশের বাজারে যেগুলো পাওয়া যায়, তার বেশিরভাগ ক্রিমই আসলে এরকম।”

”আমাদের উচিত, নিজেদের যে স্বাভাবিক সৌন্দর্য রয়েছে, সেটাকেই ঠিকভাবে রাখা এবং যত্ন করা। মনে রাখতে হবে, সাদা হয়ে যাওয়া সম্ভব না। তবে কিছু মেডিকেশন আছে যেগুলোয় ত্বক হয়তো উজ্জ্বল হয়।” বলছেন মিজ খান।

কিন্তু যেভাবে গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে অহরহ শরীরের ত্বক ফর্সা করার বিজ্ঞাপন বা ঘোষণা দেয়া হয়, তাহলে সেগুলো কতটা বিশ্বাসযোগ্য?

ডা: ঝুমু জাহানারা খান বলছেন, ”মেডিকেল পণ্যের ওপর নানা নজরদারি আছে, আইন আছে। কিন্তু কসমেটিকস পণ্যের ক্ষেত্রে সেটা নেই। সে কারণে ওরা যা খুশি তাই, অনেক আজেবাজে জিনিসও কনজ্যুমার পণ্য হিসাবে বাজারে ছাড়া হয়। যেমন ফর্সা করার সস্তা ক্রিম তো অবশ্যই ত্বকের ক্ষতি করবে।”

তিনি বলছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া একজনের কথা শুনে আরেকজন পণ্য ব্যবহার করেন। কিন্তু একেকজনের ত্বক একেক রকম হওয়ায় কারো কারো জন্য সেটা চরম ক্ষতিকর হয়ে ওঠে।

✬আরও পড়ুন:ওজন কমান মাত্র ১০/১৫ দিনে

বাংলাদেশের বাজারে প্রসাধনীর কি অবস্থা?

বাংলাদেশের যেসব প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার করা হয়, সেগুলোর বেশিরভাগেই ক্ষতিকর বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান রয়েছে যা স্বাস্থ্য ও পরিবেশর জন্য ক্ষতিকর বলে জানিয়েছে এনভায়রনমেন্ট এন্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) নামের একটি বেসরকারি সংস্থা

তারা বাংলাদেশের নামীদামী ৩৩টি প্রসাধনী পণ্য পরীক্ষা করে সবগুলোয় ক্ষতিকর উপাদানের অস্তিত্ব পেয়েছে। তারা বলছেন, বাংলাদেশের হেয়ার জেল, বেবি লোশন, বিউটি ক্রিমসহ বিভিন্ন প্রসাধনীতে আর্সেনিকসহ বিভিন্ন রাসায়নিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

এমনকি শিশুদের জন্য ব্যবহৃত হয়, এমন প্রসাধনীতেও বিষাক্ত উপাদানের অস্তিত্ব রয়েছে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।

তারা বলছে, নামীদামী পণ্যগুলোর মধ্যেই তারা এসব উপাদান পেয়েছে, তাহলে কমদামী অন্য পণ্যের কি অবস্থা, তা সহজেই অনুমেয়।

এসব পণ্যের ব্যাপারে ক্রেতা বা বিক্রেতাদের মধ্যে খুব একটা সচেতনতা দেখা যায় না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বাজারে ক্ষতিকারক উপাদানের কসমেটিকস রয়েছে।

✬আরও পড়ুন:৭ দিনে ফর্সা হওয়ার ক্রিম

ত্বকের সৌন্দর্য যখন মানসিক রোগের কারণ

বাংলাদেশের ত্বক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ত্বক ফর্সা বা উজ্জ্বল করতে গিয়ে অনেকেই উল্টো ক্ষতির মুখে পড়েন। মুখের ত্বকে দাগ

তৈরি হওয়া, রোদে বা তাপের মধ্যে যেতে না পারা, চুলকানি বা লালচে হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যাও তৈরি হয়।

ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টারের মনোবিজ্ঞানী ইসরাত শারমিন রহমান বলছেন, সৌন্দর্যের জন্য চেষ্টা করতে গিয়ে যখন সেটি উল্টো সৌন্দর্য হানির কারণ হয়, সেটি অনেকের ওপর মানসিকভাবে প্রভাব ফেলে।

তিনি বলছেন, যিনি নিজেকে আরো সুন্দর করার চেষ্টা করেছেন, বা কোন ক্ষত ঢাকার চেষ্টা করছেন, তিনি যখন উল্টো ত্বকের সমস্যায় পড়েন, সেটা তার ওপর মানসিকভাবে অনেক প্রভাব ফেলে। হয়তো অনেকে তাকে এ নিয়ে প্রশ্ন করে। তখন তার মধ্যে রাগ তৈরি হয়, হতাশা তৈরি হয়। তিনি হয়তো নিজেকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। এটা তার আত্মবিশ্বাসের ওপরেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

অনেকের মধ্যে ‘অস্বীকার করার’ প্রবণতাও তৈরি হয়। তারা এসব দাগ বা ত্বকের ক্ষতি ঢাকতে গিয়ে আরো বেশি ক্ষতি করে ফেলেন, বলছেন চিকিৎসকরা।

✬আরও পড়ুন:M19 Bluetooth Headphone

বিশেষজ্ঞরা কি বলছেন?

বাংলাদেশের প্রসাধনী ও রূপচর্চা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন কানিজ আলমাস খান।

তিনি বলছেন, হুট করে বা অন্যদের দেখে কোন প্রসাধনী ব্যবহার করা উচিত না। কারণ একজনের ত্বকের জন্য সেটি ঠিক হলেও, আরেকজনের জন্য সেটি ভালো নাও হতে পারে।

”বাসায় বসে ত্বকের জন্য হার্বাল পণ্য ব্যবহার করা ভালো। ডিম, দুধ, মধু, দই শসা- সমস্ত কিছু ত্বকের জন্য ভালো। তৈলাক্ত ত্বক বা শুষ্ক ত্বক অনুযায়ী এসব পণ্য তারা ত্বকের জন্য ব্যবহার করতে পারেন, কারণ এগুলোতে ক্ষতিকর কিছু নেই।”

তিনি বলছেন, ”অনেক রং ফর্সাকারী ক্রিমেই ত্বক পাতলা হয়ে যায় বা ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠে। পরে দেখা যায়, তারা রোদে বের হতে পারছেন না বা অন্য কিছু ব্যবহার করতে পারছেন না। পরে পুরো ত্বকের ব্যাপারটি তাদের আয়ত্তের বাইরে চলে যায়।”

”এ কারণে আমি সবাইকে বলতে চাই, রং ফর্সাকারী ক্রিমের দিকে একেবারেই না তাকানোর জন্য। বরং সবাইকে বলবো, ঝকঝকে সুন্দর এবং স্বাস্থ্যকর একটি ত্বকই যথেষ্ট, ফর্সা হওয়া জরুরি নয়।”

 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

X